সোমবার, অক্টোবর 14, 2024
হোমপশ্চিম বর্ধমানরানীগঞ্জ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প কি বিশবাও জলে?

৩০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প কি বিশবাও জলে?

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিনিধি, রবিবার, ০২ জুন ২০২৪, রানীগঞ্জ: প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার উন্নত মানের কয়লা সমৃদ্ধ প্রকল্পটি, যা ১২৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত এবং ৩৫.৬২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে, সেখানে ৪০০ জনের সরকারি চাকরি এবং ৮০০ জনের ঠিকা শ্রমিকের চাকরির সম্ভাবনা ছিল। তবে এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর, রবিবার এলাকার সাধারণ মানুষ এই খবর পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পাঁচটি স্থানীয় সংগঠনের সদস্যরা খোলা মুখ খনির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, এই প্রকল্প কোনোভাবেই সরিয়ে নিতে দেওয়া হবে না। প্রতিবাদের ভাষায় তারা নিজেদের দাবি জানায়।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে জামুরিয়ার কুনুস্তরিয়া এরিয়ার পড়াসিয়ায় এই MDO প্রকল্পটি (Mine Developer and Operator) শুরু হয়, যা ইসিএল (Eastern Coalfields Limited) দ্বারা পরিচালিত। দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়লা উত্তোলন ও সরবরাহের উদ্দেশ্যে এটি গড়ে উঠেছিল। বর্তমানে, এই প্রকল্পের দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থা নিয়েছে, যা ভূগর্ভস্থ খনির কয়লা উত্তোলন করছে। তারা বিভিন্ন সমস্যার কারণে যন্ত্রাংশ সরিয়ে নিচ্ছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে, যা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এই খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার পর, পাঁচটি সংগঠনের সদস্যরা দাবি করেন যে, এই কয়লা খনির প্রকল্প কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না এবং প্রতিবাদে সরব হন।

- Advertisement -

বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ চলমান অংশে হঠাৎ কয়লা ও মাটি উত্তোলনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সরিয়ে নেওয়ায় অনেকে মনে করছেন যে ১লা জুন শনিবার থেকে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যদিও এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি, তবে যন্ত্রাংশ সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করে অনেকেই দাবি করছেন যে খনিটি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। রবিবার, ওই খনি মুখের সামনেই পাঁচটি গ্রামের বেশ কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। জানা গেছে, উন্নত মানের কয়লা মজুত থাকা এই খনি প্রকল্পটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ ভূগর্ভস্থ খনি হিসাবে গড়ে উঠছে।

তবে শনিবার হঠাৎই প্রজেক্টের কয়লা উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত বৃহৎ আকৃতির সব যন্ত্রাংশ অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখা যায় বেসরকারি সংস্থাটিকে। পাশাপাশি, সেই সংস্থায় কর্মরত বেশকিছু শ্রমিককে বাক্সপেটরা গুছিয়ে পায়ে হেঁটে খনি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়, যা নিয়ে অনেকটাই চাঞ্চল্য ছড়ায়। এই ঘটনাটি লক্ষ্য করে অনেকেই মনে করেন, কয়লা খনির কাজ এখানে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়, এই এমডিও প্রকল্পটি আগামী ২৫ বছরের জন্য কাজের বরাত পেয়েছে। যদি এই প্রকল্পটি এখানে হয়, তবে এলাকার মানুষ কর্মসংস্থান পাবে এবং এলাকার অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।

- Advertisement -

যদিও কোটি কোটি টাকা খরচ হওয়ার পরেও এই এমডিও প্রজেক্ট বন্ধ হতে পারে কেন, সে বিষয়ে বেসরকারি সংস্থার কেউই মুখ খুলতে চাননি। অন্যদিকে, ইসিএল-এর সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের তথা পড়াশিয়া কোলিয়ারির এজেন্ট মধুসূদন সিং জানান, প্রজেক্ট থেকে যে মেশিনপত্র অন্যত্র সরানো হচ্ছে, সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে প্রকল্পটি বন্ধ হবে না। সাময়িকভাবে কিছু কারণে যন্ত্রাংশ সরানো হয়েছে, পরবর্তীতে আবারও সেই অংশে কাজ হবে। তবে এই বিষয়ে এখনও সঠিক কোনো উত্তর না পাওয়ায় গ্রামের সাধারণ মানুষ চিন্তায় পড়েছেন। তারা কোন মতেই এই প্রজেক্টকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেবেন না বলেই দাবি করেন। যদিও প্রকল্প থেকে যন্ত্রাংশ সরিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গে মধুসূদন সিং বিশেষ কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একদল সদস্যের মতে, কোনো এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এই প্রজেক্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এদিকে, প্রকল্প থেকে ভারী যন্ত্রাংশ সরিয়ে নিতে আসা এক ট্রেলার ড্রাইভার জানান, তাদের মালিকের নির্দেশে তারা মেশিনপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। তারা মালিকের নির্দেশ অনুসারে কাজ করছেন, তবে প্রকল্প কেন বন্ধ হচ্ছে, সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।

- Advertisement -
Sk Sahiluddin
Sk Sahiluddinhttps://www.postbardhaman.com
Sk Sahiluddin একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক যিনি বৈশ্বিক দর্শকদের কাছে সঠিক ও প্রভাবশালী সংবাদ উপস্থাপনের জন্য নিবেদিত। পোষ্ট বর্ধমানের সম্পাদক হিসেবে, তিনি সম্পাদকীয় দিকনির্দেশনা গঠনে এবং সর্বোচ্চ সাংবাদিকতার মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন
- Advertisment -

জনপ্রিয় খবর