নিজস্ব প্রতিনিধি, বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, জামুড়িয়া: সরকার অনুমোদিত বৈধ পাথর খাদান থেকে তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে। দাবি মতো টাকা না পেয়ে, আশপাশের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক বাসিন্দা পাথর খাদানে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ। এতে একটি জেসিবি মেশিন, তিনটি বড় গাড়ি, এবং বেশ কিছু যন্ত্রাংশ ভাঙচুর করা হয়। ছয়টি মোটরবাইকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার সময় তিনজন কর্মীকে মারধর করা হয়েছে এবং তারা আহত হন। আহতদের প্রথমে স্থানীয় প্রাথমিক ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়া থানার চুরুলিয়া ফাঁড়ির বাগুলি গ্রামে একটি পাথর খাদানে এই ঘটনাটি ঘটেছে। বিকেলেই পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে জামুড়িয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে।
অন্যদিকে, যারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের পেছনে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ নেতার মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনা নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তবে শাসক দলের নেতারা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, যারা হামলা চালিয়েছে, সেটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। নেতারা জানান, তারা এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যার কথা শুনতে সেখানে গিয়েছিলেন এবং তারপর কিছু ঘটে থাকতে পারে, তবে এ বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান নেই।
ঐ পাথর খাদানের কর্মী উজ্জ্বল মাজি জানান, যারা এদিন আসে, তারা আগেও এসেছিলো তোলা আদায় করতে। এদিন দুপুরে একই কারণে তারা আসে, কিন্তু মালিকেরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না। আমরা মোটরবাইক রেখে দূরে গিয়েছিলাম অন্য কাজে। তখন তারা হামলা চালায়। তারা একটি জেসিবি মেশিন, তিনটি বড় গাড়ি, এবং বেশকিছু খাদানে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ভাঙচুর করে। ছয়টি মোটরবাইকও ভাঙা হয়। সেখানে থাকা তিনজন কর্মীকেও মারধর করা হয়। আমরা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে যাই। খবর পেয়ে চুরুলিয়া ফাঁড়ির পুলিশ খাদানে আসে। আহতদের আখলপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
জামুড়িয়ার তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হরেরাম সিং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনার প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে যতদূর জানা গেছে, এই ঘটনায় দলের কোনো সদস্য জড়িত থাকার বিষয়ে তিনি অবগত নন। ঘটনাটি সম্পর্কে তাঁর ধারণা, গ্রামের কিছু লোক তাদের জমি থেকে পাথর খাদানের সামগ্রী নিয়ে যাওয়ার কারণে অসন্তুষ্ট ছিলেন। সেই অসন্তোষ প্রকাশ করতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটে। তোলা আদায়ের কোনো বিষয় তিনি এতে দেখতে পাননি। তিনি পরামর্শ দিয়েছেন যাতে বসে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া হয়।
এই প্রসঙ্গে পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে মোট ১৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগে ভাঙচুর ও মারধরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, সরকারি এই পাথর খাদানের দুজন অংশীদার আছেন।