নিজস্ব প্রতিনিধি, সোমবার, ১২ আগস্ট ২০২৪, আসানসোল: আসানসোল জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সোমবার বিক্ষোভে সামিল হন, প্রতিবাদ জানিয়ে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার বিরুদ্ধে। তারা কালো ব্যাজ ধারণ করে এবং প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে মিছিল করেন। বিক্ষোভকারীরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের ফাঁসির দাবি তোলেন।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিবাদে অন্যান্য মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মতোই আসানসোল জেলা হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা (ডিএনবি কোর্সের ছাত্ররা) সোমবার কর্মবিরতি পালন করেন। যদিও তারা আউটডোরে সিনিয়র চিকিৎসকদের সাথে কাজ করেননি, ইনডোর বা ওয়ার্ডে রোগীদের সেবা দিয়েছেন।
আসানসোল জেলা হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ আরশাদ আহমেদ বলেন, “আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর ও চিন্তাজনক। এমন ঘটনা যে অন্য কোথাও বা কারও বাড়িতে ঘটবে না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনা যে কোনো মহিলার সঙ্গেই ঘটতে পারে। তাই সরকারের উচিত কর্মক্ষেত্রে সঠিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো মহিলাকে এমন মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হতে না হয়।”
আসানসোল জেলা হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডাঃ শ্রীরূপা ভট্টাচার্য্য এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা সবাই ওই মহিলা চিকিৎসকের পরিবারের পাশে আছি।” ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকরা জনগণের সেবায় দিনরাত পরিশ্রম করেন, আর সেই রকম একজন চিকিৎসককে যেভাবে একজন বর্বরের হাতে প্রাণ হারাতে হলো, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের ফাঁসি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে, এবং যদি এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকে, তাকেও কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসকরা দিনরাত পরিশ্রম করে জনগণের সেবা করেন, এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের প্রথম দায়িত্ব। এই ব্যবস্থা দ্রুত কার্যকর করা জরুরি।” বিক্ষোভে অংশ নেওয়া অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডাঃ রহুল আমিন, ডাঃ সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়, এবং ডাঃ রুদ্রনীল লাহিড়ী।
এদিকে, এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালের ডিএনবি কনফারেন্স রুমে সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাসের সঙ্গে চিকিৎসকদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে আসানসোল দক্ষিণ থানার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর কৌশিক কুন্ডু উপস্থিত ছিলেন।
সুপারের মাধ্যমে চিকিৎসকরা হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের কাছে একাধিক দাবি বা প্রস্তাব পেশ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল জেলা হাসপাতালে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো এবং নজরদারি বৃদ্ধি করা। পরে এই প্রসঙ্গে সুপার বলেন, “নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, যা পুলিশের কাছে জানানো হয়েছে। এছাড়াও, কিছু দাবির বিষয় স্বাস্থ্য দপ্তরকেও জানানো হয়েছে।”