নিজস্ব প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, আসানসোল: শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে আবর্জনা সংগ্রহ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমা করা হয়। কিন্তু সেখানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ না হওয়ায় আসানসোলে মারাত্মক দূষণ ছড়াচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সঠিকভাবে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের দাবি জানিয়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
কলকাতার দিক থেকে আসানসোলে প্রবেশের মুখে, ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে কালিপাহাড়ি এলাকায় একটি বড় ডাম্পিং গ্রাউন্ড রয়েছে। এটি আসানসোল পুরসভার সবচেয়ে বড় ডাম্পিং গ্রাউন্ড। আসানসোল উত্তর বিধানসভার ৩২টি ওয়ার্ড এবং আশেপাশের অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করা আবর্জনা এখানে জমা করা হয়।
প্রায় ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এখানে শহরের আবর্জনা জমা হচ্ছে, যার ফলে আবর্জনার বিশাল পাহাড় তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে এত বছর ধরে এখানে শহরের যাবতীয় আবর্জনা জমা হলেও উপযুক্ত বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে গোটা এলাকা দুর্গন্ধে ভরে গিয়েছে।
এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের আশপাশে কালিপাহাড়ি, ছাতাপাথর, এবং বকবাঁধি সহ কয়েকটি বসতি এলাকা রয়েছে। এই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গরমের সময় তাদের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়। প্রখর রোদে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমা হওয়া পলিথিন এবং অন্যান্য অপচনশীল পদার্থে আগুন লেগে গেলে, ঝাঁঝালো গন্ধের ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে এবং বিস্তীর্ণ এলাকা ঢেকে যায়। সম্প্রতি, এমন একটি ঘটনায় ছাতাপাথর ও বকবাঁধি অঞ্চলের শিশু এবং প্রবীণরা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা নব্যেন্দু ঘোষ বলেন, “গ্রীষ্মকালে আগুন লাগার ঘটনা বেশি হয়। তখন আমাদের ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে রাখতে হয়, তবুও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় না।”
পুরসভা সূত্রে জানা গেছে, গরমে রোদের তাপে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জমে থাকা বর্জ্যের গ্যাস থেকে আগুন ধরে যায়। বাসিন্দারা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে বৈজ্ঞানিক উপায়ে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের দাবি জানিয়েছেন। এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরোধী পুর-প্রতিনিধিরাও। কংগ্রেসের পুর-প্রতিনিধি গোলাম সরওয়ার বলেছেন, “এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরাও মেয়রের কাছে আবেদন করেছি।” বিজেপির পুর-প্রতিনিধি গৌরব গুপ্তও বলেছেন, “সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র বসানোর আবেদন করেছি।”
মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে প্রয়োজন মতো জল ছেটানোর ব্যবস্থা করি এবং বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা হয়েছে।” তিনি জানান, কিছুদিন আগে ওই আবর্জনার স্তূপে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছিল এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে জল দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।