নিজস্ব প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪, আসানসোল: শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেছেন আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় (Kazi Nazrul University) -এর উপাচার্য ড. দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তিনি রাজ্যপাল ও আচার্য ড. সিভি আনন্দ বোসকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় ড. বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই ফোনে জানিয়েছেন, তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “উড়িষ্যার একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভালো একটি অফার পেয়েছি। তাই এখানকার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালাম। আশা করেছিলাম, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো কিছু কাজ করতে পারবো, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। আসানসোলের মানুষদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, কারণ তারা সবসময় আমার পাশে ছিলেন। যে কাজটি এখানে করতে পারিনি, আশা করছি উড়িষ্যায় সেটি করতে পারবো।”
উল্লেখ্য, আসানসোলের কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অচলাবস্থা চলছে। গত ৯ জুলাই থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি (তৃণমূল ছাত্র পরিষদ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে আইনি খরচে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এই আন্দোলনের মধ্যে দু’বার উপাচার্য ড. দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন, কিন্তু দু’বারই তাকে টিএমসিপির কর্মী ও সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। ফলে তিনি দুদিনই বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যেতে বাধ্য হন এবং এরপর থেকে বাড়ি থেকেই কাজ করছিলেন। এরই মধ্যে একবার পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশ করলেও এবার তিনি চূড়ান্তভাবে পদত্যাগ করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের চাপের কারণেই তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছে।
এদিকে, উপাচার্য ড. দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন টিএমসিপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শুনেছি উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন, তবে আমরা চাইছিলাম তিনি তার সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে আইনি খরচের হিসাব দেন। কিন্তু তিনি সেই হিসাব না দিয়েই চলে গেলেন।”
অভিনব মুখোপাধ্যায় আরও বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প। অথচ তিনি (ড. দেবাশীষ) এক যোগসাজশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরি করেছিলেন। তাকে এখানে এনেছিলেন বর্তমান রাজ্যপাল।”
প্রসঙ্গত, এর আগের উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তীর বিদায়ের পর ড. দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং তার মেয়াদকাল এখানে প্রায় এক বছরের মতো ছিল।