নিজস্ব প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, রানীগঞ্জ: ব্রাউন সুগার পাচার করে অর্থ উপার্জন করে নিজেকে রোগ মুক্ত করার চেষ্টা করছিল এক মাদক পাচারকারী। দীর্ঘদিন ধরে এই নিষিদ্ধ মাদক পাচার করে আসছিল সে। বৃহস্পতিবার, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করার পর মাদক পাচারের বিষয়টি স্বীকার করে।
বুধবার নাকা চেকিংয়ের সময় পুলিশ সতর্ক থেকে তল্লাশি চালিয়ে সফলতা পায়। রানীগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়ির পুলিশ নাকা চেকিংয়ের সময় এক মাদক পাচারকারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। তার কাছ থেকে ২১ গ্রাম ব্রাউন সুগার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
ধৃতকে বৃহস্পতিবার আসানসোল জেলা আদালতে হাজির করা হয়। পুলিশ প্রশাসন তাকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানালেও, বিচারক চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। জানা যায়, বেশ কয়েকদিন ধরেই পুলিশ মাদক পাচারের খবর পাচ্ছিল। বিশেষ নজরদারি দলের মাধ্যমে পুলিশ রানীগঞ্জ থানার পাঞ্জাবি মোড়ে নজরদারি চালায়। পাঞ্জাবি মোড় আইসি রবীন্দ্রনাথ দোলুই-এর নির্দেশে এই তৎপরতার ফলে পুলিশ বড় সফলতা পায়।
বুধবার সন্ধ্যায় রানীগঞ্জের পাঞ্জাবি মোড়, যা ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর অবস্থিত, সেখানে পুলিশের বিশেষ নজরদারি দল মাদক পাচারের গোপন খবর পায়। অন্যান্য যানবাহনের সাথে এক স্কুটি চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার সামগ্রীর মধ্যে থেকে ২১ গ্রাম ব্রাউন সুগার, যা বাজারে হেরোইন নামেই পরিচিত, উদ্ধার করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, ধৃত ৩২ বছর বয়সী ব্যক্তি সমীর আলম আসানসোলের ইসমাইল এলাকার বাসিন্দা। তিনি বীরভূমের দুবরাজপুর এলাকা থেকে ব্রাউন সুগার স্কুটিতে করে আসানসোলে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন। পুলিশ তাকে বমাল আটক করে।
ধৃত ব্যক্তি স্বীকার করেছেন যে, তিনি বীরভূম থেকে আসানসোলে মাদক ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই তা নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই কাজে যুক্ত আছেন। তবে দুবরাজপুরে কারা তাকে মাদক সরবরাহ করতো এবং আসানসোলে কাকে মাদক পৌঁছে দিতেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি।
বৃহস্পতিবার, রানীগঞ্জ থানার পাঞ্জাবি মোড় ফাঁড়ির পুলিশ মাদক পাচারের অভিযোগে ধৃত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আসানসোল জেলা আদালতে হাজির করে। বিচারক তাকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন, যাতে ভবিষ্যতে আরও তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
উল্লেখ্য, ইদানীং কয়লা ও শিল্পাঞ্চলে মাদক পাচারের কারবার ব্যাপকভাবে বেড়েছে, যার ফলে যুবসমাজ মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হচ্ছে। অসাধু কারবারিরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে এবং দেশের যুবসমাজকে নেশাগ্রস্ত করে তুলতে এই মারণ বিষাক্ত মাদক সমাজে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এর ফলে বস্তি এলাকার যুবক থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এই মাদক পাচার কঠোরভাবে রুখতে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, যেখানেই মাদকের কারবার চলার তথ্য পাওয়া যাবে, সেখানেই কড়া হাতে তা দমন করার জন্য সচেষ্ট থাকবে প্রশাসন।