পোস্ট বর্ধমান ওয়েবডেস্ক, শুক্রবার, ১৬ আগস্ট ২০২৪, আসানসোল: কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের উদ্যাপনে অশান্তির ছায়া কাটল না। বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মারধর ও হুমকির অভিযোগ উঠেছে। উপাচার্যের দাবি, কিছু লোক স্লোগান দিয়েছে, ‘‘এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরজি কর বানিয়ে দেব।’’ তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, তবে এখনও পর্যন্ত কোনও আটক বা গ্রেফতারের খবর পাওয়া যায়নি।
কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই অশান্তি চলছে। টিএমসিপি-র অভিযোগ, ছাত্র ভর্তির টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আইনি লড়াইয়ের জন্য খরচ করা হয়েছে। এই প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরানোর দাবি জানিয়ে তারা আন্দোলনে নামে। টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি, উপাচার্যকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে জানাতে হবে, কখন এবং কী কারণে এই অর্থ ব্যয় হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কয়েক দিন আগে নিজের বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ করতে হয়। এ নিয়ে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে চিঠি দিয়েছেন।
এর মধ্যেই শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে ঘটে আরও এক ঘটনা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপাচার্যের অভিযোগ, আচমকাই এক দল বহিরাগত দুষ্কৃতী ঢুকে অনুষ্ঠান বানচাল করার চেষ্টা করে। তারা শিক্ষাকর্মীদের গায়ে হাত তোলে এবং এক প্রতিবন্ধী মহিলা শিক্ষাকর্মীকে হেনস্থা করে। উপাচার্য জানান, “ওই শিক্ষাকর্মীর ক্র্যাচ ফেলে দেওয়া হয়। দুষ্কৃতীদের গলায় স্লোগান ছিল, ‘আরজি কর বানিয়ে দেব।'”
গণ্ডগোলের খবর পেয়ে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ দ্রুত পৌঁছায় কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাচার্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। এ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী এবং উচ্চশিক্ষা দফতরকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিনব মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মীরাই বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।” ঘটনাটি নিয়ে ডিসিপি (মধ্য) ধ্রুব দাস বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।” তিনি আরও জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।