নিজস্ব প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, খণ্ডঘোষ: ভোট মিটতেই পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির বিরোধের জেরে সোমবার রাতে খণ্ডঘোষের উখরিদ গ্রামে মারধরের ঘটনা ঘটে, যেখানে পাঁচ জন আহত হন। তাঁদের রাতেই বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে উখরিদ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি শেখ হাবিবুর রহমান, তাঁর ছেলে শেখ মেহবুব রহমান (আকাশ) এবং ভাইপো শেখ মইনুল রহমান রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের অনুগামী শেখ হাবিবুর রহমান ও তাঁর সঙ্গীদের উপর আক্রমণ হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম (ফাগুন) এই হামলার নির্দেশ দেন। মেহবুব বলেন, “আমরা শেরপাড়ায় বসে ছিলাম। সেই সময় ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলামের নির্দেশে একদল লোক বাইকে এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। তাদের হাতে রড, লাঠি ও টাঙ্গি ছিল। ব্লক সভাপতির ভাই ও ছেলে ঠিকাদারি করছেন। পুরো ব্লকের সব ঠিকাদারি কাজ করবেন অপার্থিব ইসলামের ছেলে ও ভাইপো। আমরা এর প্রতিবাদ করায় অশান্তির সূত্রপাত ঘটে।”
আহত পাঁচ জনকে প্রথমে খণ্ডঘোষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের মধ্যে তিন জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দা আলি হোসেন মণ্ডল জানান, “বিধায়কের গোষ্ঠীর সঙ্গে ব্লক সভাপতির অনুগামীদের দ্বন্দ্বের জন্যই গ্রামে মারপিট ও অশান্তি হয়েছে।” বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ বলেন, “যাঁকে মারধর করা হয়েছে, তিনি আমাদের দলের অঞ্চল সভাপতি। প্রশাসনের কাছে আমার দাবি, অভিযুক্তদের যেন অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোর সাজা দেওয়া হয়।” দলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, তৃণমূল বিধায়ক এই বিষয়টি এড়িয়ে যান।
অপরদিকে, অভিযুক্ত ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপার্থিব ইসলাম বলেন, “এই ঘটনার বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। গোষ্ঠীকোন্দল বা বিবাদের কোন বিষয়ই নেই। আমি যা খবর পেয়েছি, এটা একটা গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রশাসন বিষয়টি দেখুক।”
বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেছেন, “বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতির মধ্যে এলাকা দখল ও বালি থেকে তোলাবাজির কারণে গন্ডগোল হয়েছে।”
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি হাবিবুরের স্ত্রী আসমতারা বেগম খণ্ডঘোষ থানায় ১৭ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন। আসমতারা বেগম খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন। জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, উখরিদের ঘটনায় খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।