নিজস্ব প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, কাঁকসা: ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব পশ্চিম বর্ধমান জেলায় তেমনভাবে পড়েনি। তবে রবিবার রাত থেকে হালকা বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। সোমবার দিনভর আকাশ মেঘলা ছিল এবং হাওয়ার দাপটও ছিল। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, আসানসোলে কয়েকটি গাছ পড়ে যায়। কৃষি দফতর জানিয়েছে, এই দুর্যোগের কারণে কৃষিকাজে তেমন প্রভাব পড়বে না।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গড়ে ১১.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রেমালের প্রভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার আগেই কৃষি দফতর থেকে চাষিদের নানা সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে জেলায় মূলত তিল, ভুট্টা ও মুগ ডালের চাষ হয়। এ বছর তিল চাষ হয়েছে প্রায় ৬৫০ হেক্টর, ভুট্টা ৩২৬ হেক্টর এবং মুগ ডালের চাষ হয়েছে প্রায় ১৩৬ হেক্টর জমিতে।
কৃষি দফতর জানিয়েছে, ঝড়ের গতিবেগ বেশি হলে তিল ও ভুট্টা গাছ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে ঝড়ের প্রভাব কম থাকায় ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। এছাড়া, বৃষ্টিপাতও কম হওয়ায় জমিতে জল জমার তেমন খবর নেই। এই বৃষ্টি আমন ধান চাষের জন্য উপকারী হবে বলে মনে করছে কৃষি দফতর। আধিকারিকেরা জানান, কিছুদিন পরেই জেলায় আমন ধানের মরসুম শুরু হবে। এই বৃষ্টি মাটির আর্দ্রতা বাড়াবে এবং মরসুম শুরুর আগে চাষিরা একবার ট্র্যাক্টরে চাষ দিলে জমিতে আগাছা কম হবে, ফলে চাষিদের খরচও কমে যাবে।
জেলায় এই সময়ে প্রায় ২০০০ হেক্টর জমিতে নানা ধরনের আনাজ চাষ করেন চাষিরা। আনাজ চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঝড়ের পূর্বাভাস আগেই পাওয়ায় পটল, ঝিঙের মতো আনাজের গাছ মাচার সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিল। এছাড়া জমিতে জল জমার সম্ভাবনা এড়াতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বড় ঝড় বা অতিভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন চাষিরা। কাঁকসার অজয়পল্লির পবিত্র মজুমদার ও বিকাশ বিশ্বাস বলেন, “সামান্য বৃষ্টি হয়েছে, তবে জল কোথাও জমেনি। আনাজের তেমন ক্ষতি হয়নি।”
কৃষি আধিকারিকদের মতে, পশ্চিম বর্ধমানের মাটি এমনিতেই শুষ্ক, তাই জল জমার আশঙ্কা কম। এছাড়া, যেখানে আনাজ চাষ হয়, সেগুলি অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় অবস্থিত। জেলা উপ-কৃষি অধিকর্তা জাহিরুদ্দিন খান বলেন, “আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর নেই।”
আসানসোল মহকুমাশাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য জানান, শহরের রবীন্দ্র ভবনের কাছে কয়েকটি গাছ পড়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম সেই গাছগুলো সরানোর জন্য কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। আসানসোল পুরসভার চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, পুরসভার কন্ট্রোল রুমে কোনো অপ্রীতিকর খবর আসেনি।