নিজস্ব প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরে সরকারি বাসের বেপরোয়া চালনায় স্কুটি চালক নিহত হওয়ার ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এক স্কুটি চালক প্রাণ হারান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারি বাসের মদ্যপ চালকের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয়রা দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা এলাকার দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার মূল কার্যালয়ের সামনে একাধিকবার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা অফিসের ভেতরে ঢুকে প্রতিবাদ জানায়। উত্তেজিত জনতার বিক্ষোভের মুখে কোকওভেন থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায়।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার আসানসোল ডিপোর একটি বাস ডিভিসি মোড় থেকে দুর্গাপুর স্টেশনের দিকে আসছিল, ফিলিপ্স কার্বন কারখানার মোড়ের কাছে। সেই সময় বেপরোয়া বাসটি একটি স্কুটিকে ধাক্কা মারে, এবং স্কুটি চালক বাসের চাকায় আটকে যায়। পথচারীরা বাসের চালককে বাসটি থামানোর অনুরোধ করলেও, চালক থামেনি এবং প্রায় হাফ কিলোমিটার পর্যন্ত স্কুটি চালককে টেনে হিচড়ে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত নিয়ে যায়। জনতার ক্ষোভের আগুন দেখে বাস চালক বাসটিকে প্রধান কার্যালয়ের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, স্কুটি চালক ঘটনাস্থলেই মারা যান।
স্থানীয়রা প্রশ্ন তোলেন, কেন বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও বাসটি থামানো হয়নি। এই প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। পরে দুর্গাপুর স্টেশন রোড এলাকায় বারবার বিক্ষোভ ও অবরোধ চলে। ঘটনার খবর পেয়ে কোকওভেন থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে, কিন্তু তারা উত্তেজিত জনতার মুখোমুখি হয়।
এরপর বিক্ষোভকারীরা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার প্রধান কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে বাসের চালককে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করতে থাকে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করে, মৃত ব্যক্তির পরিবারকে ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং বাস সংস্থাকে অবিলম্বে সেই বাসের চালককে বহিষ্কার করতে হবে, নইলে তাদের হাতে চালককে ছেড়ে দিতে হবে।
মঙ্গলবার এই মর্মান্তিক ঘটনার ফলে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার অফিসে মুহূর্তের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা জানায়, যতক্ষণ না তাদের দাবি পূরণ হচ্ছে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চলবে। তাদের অভিযোগ, সরকারি বাসের বেপরোয়া চালানোর কারণে স্কুটি চালককে প্রাণ দিতে হলো। এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে, কিন্তু কেউ দেখেনি বা ব্যবস্থা নেয়নি। মৃত ব্যক্তির নাম শ্যামল প্রামানিক, তিনি দুর্গাপুরের ফরিদপুর গ্রামের বাসিন্দা। এই ঘটনায় দুর্গাপুরের কোকওভেন থানা এলাকার দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার প্রধান দপ্তরে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।