শনিবার, অক্টোবর 12, 2024
হোমপশ্চিমবঙ্গপশ্চিম বর্ধমানবাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্তে উদ্ধার যুবতীকে ফিরে নিলো না বাড়ি, পুরুলিয়ার মানসিক হাসপাতালে...

বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্তে উদ্ধার যুবতীকে ফিরে নিলো না বাড়ি, পুরুলিয়ার মানসিক হাসপাতালে পাঠালো রুপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ

- Advertisement -

নিজস্ব প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, সালানপুর: রাত অনেকটাই গভীর। রাস্তাঘাট পুরো ফাঁকা, পথচারী কেউ নেই। অন্যদিনের মতো রাস্তায় পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছিল। হঠাৎই, পুলিশ কর্মীরা দেখেন রাস্তায় একা একটি মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। তারা বুঝতে পারেন, কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। নইলে এত রাতে এমন একটা জায়গায় একা একটি মেয়ে ঘুরে বেড়াবে কেন?

সালানপুরের রূপনারায়ণপুরে ঝাড়খন্ড ঢোকার মুখে চেকপোষ্টের রাস্তায় মেয়েটিকে দেখে পুলিশ গাড়ি তার সামনে থামে। পুলিশ কর্মীরা মেয়েটির কাছে গিয়ে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা বুঝতে পারেন, মেয়েটি মানসিকভাবে সুস্থ নয়।

- Advertisement -

এরপর পুলিশকর্মীরা গোটা ঘটনাটি রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসরিন সুলতানাকে জানান। সব শুনে তিনি তৎক্ষণাৎ দুই মহিলা সিভিক ভলেন্টিয়ারসহ পুলিশের আরেকটি গাড়ি ঐ চেকপোষ্টে পাঠান। মেয়েটিকে সেখান থেকে ফাঁড়িতে আনা হয়।

ফাঁড়িতে আসার পর মেয়েটি পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে নিজেই কথা বলতে শুরু করে। তার আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় অসংলগ্নতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ইনচার্জ নাসরিন সুলতানা তাকে নিজের চেম্বারে এনে বসান এবং কিছু খাবার দেন। মেয়েটি কিছু খাবার খেয়ে চুপচাপ বসে থাকে। নাসরিন সুলতানা মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করেন, সে কোথায় থাকে এবং কোথা থেকে এখানে এসেছে। কিছু সময় পরে মেয়েটি নিজেই জানায় যে, তার বাড়ি রাঁচিতে।

- Advertisement -

একইসঙ্গে, মেয়েটি তার বাড়ির ফোন নম্বর গড়গড় করে বলে সবাইকে অবাক করে দেয়। ফাঁড়ি ইনচার্জ নাসরিন সুলতানা কিছুটা নিশ্চিন্ত হন, কিন্তু আরও কিছু সমস্যার অপেক্ষা ছিল। মেয়েটির দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করা হলে রাঁচিতে তার বাড়ির লোকজন মেয়েটিকে ফিরিয়ে নিতে রাজি হননি। কথোপকথনে ইনচার্জ জানতে পারেন মেয়েটির ভাই পুনেতে চাকরি করেন, কিন্তু তার সাথে যোগাযোগের কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি।

সব শুনে এবং বুঝে নাসরিন সুলতানা দৃশ্যত হতাশ হন। তবু, একজন পুলিশ আধিকারিক হিসেবে নয়, একজন মহিলা হিসেবে তিনি অনুভব করেন মেয়েটির অসহায় অবস্থা। তিনি জানতেন, এভাবে মেয়েটিকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, মেয়েটিকে এমন একটি জায়গায় আশ্রয় দিতে হবে যেখানে তাকে ভাল করে তোলার চেষ্টা করা যেতে পারে।

- Advertisement -

সেইমতো নাসরিন সুলতানা মেয়েটিকে নিয়ে আসানসোল আদালতে আসেন। বিচারকের অনুমতি নিয়ে মেয়েটিকে পুরুলিয়া মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার পুলিশের গাড়িতে মেয়েটিকে পুরুলিয়ায় পাঠানো হয়, সঙ্গে ছিলেন এক পুলিশ অফিসার ও এক মহিলা কনস্টেবল। কিছু পোশাক ও শুকনো খাবার মেয়েটির হাতে তুলে দেওয়ার সময় নাসরিন সুলতানা কিছুটা ভারাক্রান্ত হন।

রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির ইনচার্জসহ সব পুলিশ কর্মীদের আশা, মেয়েটি খুব শীঘ্রই মানসিকভাবে সুস্থ হবে এবং তার বাড়ি ফিরে যাবে। তখনই হয়তো জানা যাবে কিভাবে সে রাঁচি থেকে বাংলা-ঝাড়খন্ড সীমান্ত লাগোয়া রূপনারায়ণপুরে এসে পৌঁছেছিল।

- Advertisement -
Sk Sahiluddin
Sk Sahiluddinhttps://www.postbardhaman.com
Sk Sahiluddin একজন অভিজ্ঞ সাংবাদিক যিনি বৈশ্বিক দর্শকদের কাছে সঠিক ও প্রভাবশালী সংবাদ উপস্থাপনের জন্য নিবেদিত। পোষ্ট বর্ধমানের সম্পাদক হিসেবে, তিনি সম্পাদকীয় দিকনির্দেশনা গঠনে এবং সর্বোচ্চ সাংবাদিকতার মান বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আরও পড়ুন
- Advertisment -

জনপ্রিয় খবর